বাংলাদেশে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা হবে না, তবে প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা কমে গেছে, যা একটি অনিবার্য পরিণতি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কি শ্রীলঙ্কার মতো সংকটে পড়েছি? অবশ্যই না। আমাদের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়নি, অর্থনীতিও ধসে পড়েনি। এমনটি ঘটতে পারত, কিন্তু আমরা তা এড়াতে সক্ষম হয়েছি, এবং এটি প্রশংসার দাবিদার।”
আজ সোমবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন-২০২৪–এ এসব কথা বলেন আহসান এইচ মনসুর। ‘বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনর্গঠন’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যার কারণে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম হতে পারে। তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং নতুন পরিচালকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিন এসব ব্যাংকের নগদ অর্থপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হবে, যার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক একীভূতকরণ, অধিগ্রহণসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনায় আইনগত ক্ষমতা লাভ করবে। কিছু ব্যাংকে পুঁজি সঞ্চার ও নতুন বিনিয়োগ আনার লক্ষ্যে আইনি কাঠামো তৈরি হচ্ছে এবং ব্যাংকের সম্পদের মান পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, “বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংকিং খাত, যা বর্তমানে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এই দুর্বলতার প্রভাব দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে পড়েছে। ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেয়ে আমাদের এখন অতীতের ভুল সংশোধন করতে হচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, ইনস্টিটিউট অব ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফা কে মুজেরী, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আখতার, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সায়মা হক প্রমুখ।