বিটকয়েনের প্রতিষ্ঠাতার পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আরও একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা

বিশ্বের দুই ট্রিলিয়ন বা দুই লাখ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি শিল্পের ভিত্তি বিটকয়েন, যা একসময় একটি অনানুষ্ঠানিক মুদ্রা হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এটি বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এমনকি কিছু দেশে এটি আইনগত মুদ্রা হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিটকয়েনের উল্কার গতিতে উত্থান সত্ত্বেও এর প্রতিষ্ঠাতা, রহস্যময় ‘সাতোশি নাকামোটো’র প্রকৃত পরিচয় এখনও উদ্‌ঘাটিত হয়নি। অনেকেই এই পরিচয় উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করলেও সফল হননি। সম্প্রতি এইচবিও চ্যানেলে একটি তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়েছিল, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে কানাডার বিটকয়েন বিশেষজ্ঞ পিটার টডই সম্ভবত সাতোশি নাকামোটো। তবে, পিটার টড নিজেই এই দাবি অস্বীকার করেছেন এবং ক্রিপ্টো জগতেও এই দাবি গুরুত্ব পায়নি।

গত বৃহস্পতিবার, বিবিসির কাছে একটি সংবাদ আসে যে বিটকয়েনের স্রষ্টা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। এই খবর প্রচারিত হওয়ার পর ক্রিপ্টো জগতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে সম্মেলনে উপস্থিত সবাই তখন হতাশ হন যখন স্বঘোষিত সাতোশি স্টিফেন মোল্লা দাবি করলেও নিজের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হন।

সাতোশি নাকামোটোকে ঘিরে মানুষের আগ্রহের বড় কারণগুলোর একটি হলো, তিনি ১০ লাখেরও বেশি বিটকয়েনের মালিক, যার বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক বিলিয়ন ডলার। এর আগে, ২০১৪ সালে নিউজউইকের একটি প্রতিবেদনেও ডোরিয়ান নাকামোটো নামের একজন জাপানি-আমেরিকানকে সাতোশি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি এই দাবি অস্বীকার করেন। এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী ক্রেইগ রাইট এবং টেসলার প্রধান ইলন মাস্ককেও কখনো কখনো সাতোশি হিসেবে সন্দেহ করা হয়েছে, যদিও তাঁরাও এ দাবিগুলো অস্বীকার করেছেন।

ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারমূল্য এখন গুগলের চেয়েও বড় আকারে পৌঁছেছে, যা প্রযুক্তির দিক থেকে মানুষকে নতুন এক মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। তবে সাতোশির পরিচয় প্রকাশ না হওয়াটাও অনেকে ভালো চোখে দেখছেন। ক্রিপ্টোকারেন্সির একজন প্রোগ্রামার অ্যাডাম ব্যাক সম্প্রতি বলেছেন যে সাতোশির পরিচয় গোপন থাকাই সঠিক। অনেকের মতে, সাতোশির পরিচয় গোপন থাকা একপ্রকার নিরাপত্তার অংশ।

বিশ্লেষকদের মতে, সাতোশি কে, সে বিষয়ে কৌতূহল থাকলেও, এর চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো ক্রিপ্টোকারেন্সি অর্থনীতির ভবিষ্যৎকে কিভাবে প্রভাবিত করবে।

Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *