তরুণদের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনুস কেন এত জনপ্রিয়? ২০২৪ সালের প্রেক্ষাপটে এর উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকের দিকে নজর দিতে হবে।
প্রথমত, ড. ইউনূসের শিক্ষাগত পটভূমি এবং শিক্ষার প্রতি তার অবদান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। এই উচ্চশিক্ষা এবং তার গবেষণার মান তরুণদের মধ্যে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করেছে।
১৯৭৬ সালে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যা দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করে। এই ক্ষুদ্রঋণ মডেল তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়ক হয়েছে।
ড. ইউনূস ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন, যা তাকে বিশ্বব্যাপী সম্মানিত করে তোলে। তার এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তরুণদের মধ্যে তাকে একজন রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তরুণদের আরও আকৃষ্ট করেছে তার সামাজিক ব্যবসার ধারণা। ড. ইউনূসের উদ্ভাবনী চিন্তাধারা এবং সামাজিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা তরুণদের মধ্যে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসেছে, যেখানে লাভের বদলে সামাজিক পরিবর্তনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের পর, ড. ইউনূসের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী তাকে তরুণদের মাঝে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন এবং তার নেতৃত্বে শিক্ষামূলক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক দায়িত্ব, এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে তার কাজের প্রশংসা ড. ইউনূসকে তরুণদের মধ্যে আরও প্রিয় করে তুলেছে। তিনি সবসময়ই দরিদ্র এবং অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, যা তরুণদের তাকে অনুসরণ করতে প্ররোচিত করেছে।
সব মিলিয়ে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শিক্ষা, উদ্ভাবন, নেতৃত্ব, এবং সামাজিক দায়িত্বের প্রতি তার অঙ্গীকার তরুণদের কাছে তাকে প্রথম পছন্দ করে তুলেছে। তার জীবন এবং কাজ তরুণদের জন্য একটি আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে, যা তাদের নিজস্ব জীবনে পরিবর্তন আনতে অনুপ্রাণিত করছে।