চট্টগ্রামের রাউজানে প্রকাশ্যে গুলি করে তাহসিন হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন পর দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২১ অক্টোবর বিকেলে হাজিরপুর এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পুলিশ জানায়, আটককৃত দুই অভিযুক্ত- হেলাল ও ইলিয়াস হোসেন অপু – দু’জনই এই কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয়। হত্যার কারণ হিসেবে পুলিশ পূর্ব শত্রুতাকে দায়ী করছে। তবে কিলিং মিশনের নেতৃত্বদানকারী সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও তিনজন এখনও পলাতক।
ঘটনার বিবরণ
গত ২১ অক্টোবর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাজিরপুরের সামনে এক কালো রঙের মাইক্রোবাস থেকে অস্ত্র হাতে নেমে আসে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি। তাদের হাতে শটগানসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। পরিস্থিতি দ্রুত আতঙ্কিত করে তোলে এলাকার সাধারণ পথচারীদের। আশেপাশের লোকজন ছুটোছুটি শুরু করলেও টং দোকানে চা খেতে বসা আফতাব উদ্দিন তাহসিন পালাতে পারেননি। সশস্ত্র হামলাকারীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
অভিযান ও গ্রেপ্তার
তাহসিনের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে রাউজানের গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালানো হয়, যেখানে হেলাল ও ইলিয়াস হোসেন অপুকে আটক করা সম্ভব হয়। পুলিশ জানায়, এই দুইজনের কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল এবং তারা হামলার জন্য পূর্ব থেকেই প্রস্তুত ছিল।
তদন্ত ও পলাতক আসামিরা
তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ কালো রঙের মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো এখনও উদ্ধার হয়নি। সাজ্জাদ হোসেন, যিনি এই মিশনের নেতৃত্ব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তিনিসহ আরও দুই অভিযুক্ত এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তাহসিন হত্যার মূল কারণ হিসেবে পূর্ব শত্রুতাকে প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ঘটনার পেছনে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের একটি বিশেষ দল এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে তারা তৎপর রয়েছেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে এ ধরণের হত্যাকাণ্ড সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার প্রতি বড় হুমকি তৈরি করেছে। পুলিশ আশা করছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ ঘটনার সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে এবং নিহত তাহসিনের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে।