এই ধাপ গুলো অনুসরণ করলে মার্কেটের সেরা ল্যাপটপটি বাছাই করতে আপনার সুবিধা হবে।
১. ল্যাপটপ কিনবেন নাকি ডেস্কটপ?
- → ল্যাপটপ একটি পোর্টেবল সিস্টেম বা মেশিন। যেটাকে আপনি ক্লাস রুম, অফিস, ছাঁদে যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু ডেস্কটপ কম্পিউটার এই সুবিধা পাবেন না। কিন্তু যে পরিমাণ টাকা আপনি ল্যপটপ এর পেছনে খরচ করছেন সেই টাকাটা দিয়ে যদি একটি পিসি বিল্ড করেন তাহলে ল্যপটপ এর থেকে দ্বিগুণ পারফরম্যান্স পাবেন। তাই যদি আপনার পোর্টেবিলীটির প্রয়োজন না হয় তাহলে আপনাকে ডেস্কটপ কম্পিউটার কেনার জন্য সাজেস্ট করছি। কিন্তু যদি আপনার এটিকে অফিসে, ক্লাস রুমে বা বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে হয় তাহলে ল্যপটপ কেনাটাই আপনার জন্য ভালো হবে।
২. আপনি কি কাজের জন্য ল্যাপটপটি কিনছেন?
→ আপনি কি কাজের জন্য ল্যাপটপটি কিনছেন গেমিং নাকি ভিডিও এডিটিং নাকি অফিসিয়াল কাজের জন্য, লেখা পরার জন্য নাকি ইত্যাদি… ইত্যাদি…। গেমিং করলে গেমিং ল্যাপটপ, এডিটিং করলে এডিটিং ল্যাপটপ। আর অফিসিয়াল কাজের এবং লেখা পরার জন্য মোটামুটি পারফরম্যান্স এর ল্যাপটপই যথেষ্ট। বেশি হাই পারফরম্যান্স এর ল্যাপটপ এর প্রয়োজন পড়ে না।
৩. আপনার বাজেট কত?
→ এক এক জোনের বাজেট এক এক রকম হয়। স্বাভাবিক ভাবে বলতে গেলে আপনি যদি অফিসিয়াল কাজ কর্ম করে থাকেন, যেমন ইন্টারনেট ব্রাউজিং, এম.এস.অফিস, ওয়ার্ড প্রসেসিং, ইউটিউবে ভিডিও দেখা বা মুভি দেখা এসব কাজের জন্য আপনার বাজেট ৩৫-৪৫ হাজার টাকা হলেই হবে।
+ আপনি যদি ফটোশপ, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স এর কাজ করেন তাহলে আপনার বাজেট ৫৫-৬০ হাজার টাকার মধ্যে থাকতে হবে।
+ আপনি যদি প্রফেশনাল লেভেলের ফটোশপ, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স এর কাজ করেন তাহলে আপনার বাজেট ৭০-৯০ হাজার টাকার মধ্যে থাকতে হবে।
আপনি যদি গেমিং করেন তাহলে আপনার বাজেট থাকতে হবে ৬০-৭০ হাজার টাকার এর মধ্যে
আপনি যদি প্রফেশনাল লেভেলের গেমিং করেন তাহলে আপনার বাজেট থাকতে হবে সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকা বা ১ লাখ টাকার উপরে।
বিঃদ্রঃ গেমিং যদি আপনার মেইন পারপাস হয়ে থাকে তাহলে ল্যপটপ এর থেকে ডেস্কটপ কম্পিউটার সবথেকে বেটার হবে।
৪. কোন ব্রান্ডের ল্যাপটপ নিবো?
→ আগেই ব্রান্ড বাছাই করে ল্যাপটপ কিনবেন না। কোনটার স্পেসিফিকেশন এবং পারফরম্যান্স কেমন সেটি দেখে ল্যাপটপ বাছাই করবেন। মার্কেটে দুই টায়ারের ল্যাপটপ হয়ে থাকে, এটায়ার ও বিটায়ার।
আপনার বাজেট ৩৫ হাজার এর নিচে হলে বিটায়ার এর ল্যাপটপ নিবেন।
আর, যদি আপনার বাজেট ৪০ হাজার এর উপরে হয় এটায়ার এর ল্যাপটপ নিবেন।
এটায়ার এর ল্যাপটপ, যেমন : hp, DELL, MSI, Asus, aser, Lenovo etc.
এটায়ার এর ল্যাপটপ, যেমন : iLife, Abtie এই সব চাইনিজ ব্রান্ড এর ল্যাপটপ।
৫. কোন প্রসেসর টি নিবেন?
→ প্রসেসর দুই ধরনের হয়ে থাকে। ইন্টেল এবং এ.এম.ডি।
ল্যাপটপ এর জন্য ইন্টেলই ভালো।
আর সব সময় চেষ্টা করবেন ইন্টেল নতুন জেনারেশন এর ল্যাপটপ কেনার। আপনি চাইলে একটু পেছনের জেনারেশন এর ল্যাপটপ কিনতে পারেন। বর্তমান যে জেনারেশন চলছে তার তিন জেনারেশন পেছনে যেতে পারেন। তার বেশি পেছনে যাওয়া টা ঠিক হবে না।
আপনার যদি অফিসিয়াল কাজ কর্ম হয় এবং বাজেট হয় ৩৫-৪৫ হাজার টাকা তাহলে i3 প্রসেসর নিতে পারেন।
আর যদি বাজেট হয় ৬০ হাজার টাকার উপরে তাহলে i5 প্রসেসর নিতে পারেন।
আর যদি বাজেট ৮০ হাজার টাকার উপরে হয় তাহলে i7 প্রসেসর নিতে পারেন।
আর যদি বাজেট ১ লাখ টাকার উপরে হয় তাহলে i9 প্রসেসর নিতে পারেন।
৬. কত GB Ram নিবেন?
→ বর্তমান সময়ে সফটওয়্যার গুলো প্রচুর পরিমাণে রিসোর্স হাংগ্রি অর্থাৎ এই সফটওয়্যার গুলো চালানোর জন্য একটু শক্তিশালী সিস্টেম দরকার। আপনি যত বেশি Ram নিবেন আপনার সিস্টেম এবং সফটওয়্যার ততো বেশি smoothly চলবে। একটি ল্যাপটপ এর জন্য সর্বনিম্নে 4GB Ram দরকার। আপনি যদি পারেন চেষ্টা করবেন 8GB Ram নেওয়ার। আর যদি না পারেন তো সর্বনিম্ন 4GB Ram নিবেন, এর নিচে নামবেন না।
Ram দুই ধরনের হয়ে থাকে,
DDR : এটি একটি পাওয়ারফুল Ram. এটি একটু বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে কিন্তু এটির পারফরম্যান্স বেশ ভালো হয়ে থাকে। DDR Ram বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে DDR4 বা DDR5 Ram ইত্যাদি।
LP DDR : এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। কিন্তু এর পারফরম্যান্স DDR Ram এর থেকে খারাপ হয়ে থাকে। এই Ram সাধারণত মোবাইল ফোনেও ব্যবহার করা হয়।
আপনার যদি বেশি ভালো পারফরম্যান্স এর দরকার হয় তাহলে চেষ্টা করবেন DDR সিরিজ এর DDR4 বা DDR5 Ram নেওয়ার।
আর, আপনার যদি ভালো ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ এর প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি LP DDR সিরিজের Ram নিতে পারেন।
৭. SSD নিবেন নাকি HDD?
→ HDD ওয়ালা ল্যাপটপ অনেক slow হয়ে থাকে। আর বর্তমান সময়ে HDD না নেওয়াটাই ভালো। আপনি চেষ্টা করবেন SSD ওয়ালা ল্যাপটপ নেওয়ার। SSD এর রিড-রাইড স্পিড HDD এর তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। SSD দুই ধরনের হয়
SATA SSD – এর স্পিড NVME SSD এর থেকে কম হয়ে থাকে, এর দামও কম
NVME SSD – এর স্পিড SATA SSD এর থেকে অনেক বেশি হয়ে থাকে, এর দামও বেশি
আপনার বাজেট বেশি হলে এবং স্পিড বেশি চান তাহলে আপনি NVME SSD নিতে পারেন।
আর, আপনার বাজেট যদি কম হয় এবং স্পিড কম হলেও সমস্যা নেই তো আপনি SATA SSD নিতে পারেন।
বিঃদ্রঃ আপনি যেই SSD টাই নেন HDD এর থেকে ভালো পারফরম্যান্স পাবেন
৮. কোন গ্রাফিক্স কার্ডটি নিবেন?
→ আগে জানুন যে আপনার আদোও গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে কি-না। আপনি যদি ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, গেমিং করেন তাহলে গ্রাফিক্স কার্ড লাগবে। আর যদি আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজিং, মুভি দেখা, অফিসিয়াল কাজের জন্য গ্রাফিক্স কার্ড এর প্রয়োজন হয় না। আর গ্রাফিক্স কার্ডওয়ালা ল্যাপটপ এর দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে।
৯. পোর্ট সিলেকশন
→ ল্যাপটপ কেনার আগে দেখে নিবেন যে আপনার প্রয়োজনীয় সকল পোর্ট আছে কি-না। যেমন : Full size USB A port, microphone port, HDMI port, headphone jack ইত্যাদি।
১০. কোন ধরনের Display ওয়ালা ল্যাপটপ নিবেন?
→ সব সময় চেষ্টা করবেন IPS বা IPS label এর ল্যাপটপ নেওয়ার। ওলেড ডিসপ্লে পেলে আরো ভালো হয়। IPS, IPS label বা ওলেড ডিসপ্লে ছাড়া অন্য কোনো ডিসপ্লে ওয়ালা ল্যাপটপ কিনবেন না।