কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বালিয়ামারী হাট পুনরায় চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজীবপুর উপজেলা পরিষদের সামনে রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সীমান্ত হাটের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় বিপর্যস্ত জীবনযাপন
মানববন্ধনে রাজীবপুরের সীমান্ত হাটকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী, কুলি, ভ্যান শ্রমিক ও প্রায় এক হাজারের বেশি বেকার মানুষ অংশ নেন। তারা দ্রুত সীমান্ত হাট পুনরায় চালুর দাবি জানান, যা অনেকের জন্য প্রধান জীবিকার উৎস ছিল। আয়োজকদের মতে, এই সীমান্ত হাটটি প্রথম চালু হয়েছিল ২০১১ সালে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে। সপ্তাহে দু’দিন বসা এ হাটে ৫৮৭ জন ক্রেতা কার্ডধারী এবং ২৫ জন বিক্রেতা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পেয়েছিলেন। হাটকেন্দ্রিক প্রায় দুই হাজার মানুষ এই ব্যবসায় জড়িত ছিলেন, যা তাদের জীবনযাপনের প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
বন্ধ হওয়ার কারণ ও ভারতের অবস্থান
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ৭ আগস্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালিয়ামারী সীমান্ত হাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে ভারতের পক্ষ থেকে হাট চালু রাখার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, কোনো একটি মহল প্রশাসনকে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে এই হাটটি বন্ধ করে রেখেছে, যার ফলে হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
আয়োজকদের বক্তব্য ও মানববন্ধনের দাবিসমূহ
রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির আহ্বায়ক রবিউল ইসলামের সঞ্চালনায় আয়োজিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কমিটির সদস্যসচিব শিপন মাহমুদ, রাজীবপুর উপজেলা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু সাঈদ, সদস্যসচিব সুমন মাহমুদ, ভূমিহীন সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ, ফরিদ উদ্দিন ডিলার, সাংবাদিক মাইদুল ইসলাম ও লিটন মিয়া। বক্তারা জানান, সীমান্ত হাটটি বন্ধ থাকার ফলে কুলি শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিক, নৌকার মাঝি থেকে শুরু করে অনেকেরই জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সীমান্ত হাট পুনরায় চালুর জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান
বক্তারা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান যেন দ্রুত এই সীমান্ত হাট পুনরায় চালু করা হয়। তাদের মতে, সীমান্ত হাটটি চালু হলে কর্মসংস্থানের সঙ্কট কাটিয়ে হাজার হাজার মানুষ আবারও তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।