পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ
কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে গুলি করে হত্যা করা হয় খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী ওরফে টিপুকে। পরিবার অভিযোগ করেছে, খুলনার শত্রুরা শুটার ভাড়া করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে কারা এই শত্রু তা স্পষ্ট করেনি পরিবার।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় কক্সবাজারের সিগাল হোটেলের সামনে ঝাউবাগানে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি রব্বানীর মাথায় গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরিবারের বক্তব্য
গোলাম রব্বানীর বড় ভাই গোলাম রসুল বলেন, “রব্বানী একজন জনপ্রিয় কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তা এত বেশি ছিল যে, কেউ তাঁকে টপকাতে পারত না। এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।”
রব্বানীর বাবা গোলাম আকবর বলেন, “আমার ছেলে ছোটবেলা থেকেই মানুষের উপকার করত। কাউন্সিলর হওয়ার পর এলাকায় অনেক ভালো কাজ করেছে। কক্সবাজারের লোকজন নয়, খুলনার শত্রুরাই এটি ঘটিয়েছে। আমি চাই, প্রকৃত অপরাধীরা ধরা পড়ুক।”
রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত বিরোধ
গোলাম রব্বানীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অতীতে রব্বানী আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। খুলনা, দৌলতপুর, পাবলা এবং দেয়ানার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, ব্যক্তিগত শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের কারণেই তাঁকে হত্যা করা হতে পারে।
২০১৫ সালে তেল ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রব্বানীর নাম জড়িয়েছিল। তাঁর ভাই বলেন, “অতীতের কোনো ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবেও এটি ঘটতে পারে।”
র্যাবের অভিযানে সন্দেহভাজন আটক
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে র্যাব কক্সবাজার থেকে সাবেক কাউন্সিলর হাসান ইফতেখারকে আটক করেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইফতেখারের যোগসূত্র ছিল।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
প্রতিবেশীরা জানান, রব্বানীর এলাকায় ব্যাপক প্রভাব ছিল। তাঁর সুনাম যেমন ছিল, তেমনি শত্রুও কম ছিল না। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মানুষের উপকার করতেন, কিন্তু ভিন্নমতের লোকদের হয়রানি করতেন।”
এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে রব্বানীর বাড়িতে ককটেল হামলার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায়ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করেছিলেন তিনি।
পরবর্তী পদক্ষেপ
পরিবার এখনো মামলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাঁদের একজন পুলিশ কর্মকর্তা আত্মীয় বিষয়টি তদন্তে এগিয়ে এসেছেন।