ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম আজ জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সব সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশে একটি নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এক সপ্তাহের মধ্যেই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হবে।
সোমবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের কার্যালয়ে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকোন অ্যারাল্ড গুলব্রান্ডসেনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই বিষয়গুলো আলোচনা করেন।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠছে। ফ্যাসিস্ট সরকার প্রায় ১৬ বছর ধরে দেশজুড়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে যাতে দেশের মানুষ এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পায়।’ তিনি নরওয়ের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সরকার উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে নরওয়ের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করতে আগ্রহী এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও গণমাধ্যম খাতে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে, এমন মন্তব্য করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রীয় পুনর্গঠনে পাশে থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের ঘোষণা বৈঠকে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে জানতে চাইলে, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানান, ‘এক সপ্তাহের মধ্যেই আইনটি বাতিল করা হবে। এই আইনের অধীন হওয়া সব মামলাও বাতিল করা হবে। শুধুমাত্র এই আইনই নয়, মতপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি করে এমন সব আইন পর্যালোচনা করে সংস্কার করা হবে। এসব সংস্কারের ক্ষেত্রে অংশীজনদের মতামত নেওয়া হবে।’
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিষয়ে নিশ্চয়তা বৈঠকে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিষয়েও জানতে চান। নাহিদ ইসলাম তাকে জানান যে, বর্তমানে সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই আছেন এবং সর্বশেষ দুর্গাপূজা উদযাপনে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বিগত সরকারের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নানা ঘটনার বিচার না হলেও, এখন সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারিত নেতিবাচক সংবাদ নিয়ে নাহিদ ইসলাম উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে নরওয়ের সহযোগিতা কামনা করেন। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়েও আলোচনা হয়।
এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এবং নরওয়ের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়ান রাবে ন্যাভেলসউরড উপস্থিত ছিলেন।