দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের অবসান ঘটিয়ে আজ কারামুক্ত হচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তার মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী মির্জা হায়দার আলী।
কারাগার থেকে মুক্তির পর লুৎফুজ্জামান বাবর নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন। এরপর তিনি গুলশানের নিজ বাসায় ফিরে যাবেন বলে জানা গেছে।
হাইকোর্টের রায়ের পর মুক্তির পথ প্রশস্ত:
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বাতিল করে তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন।
হাইকোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে বাবরের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ফলে তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
কারামুক্তির প্রক্রিয়া:
কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক জান্নাত-উল-ফরহাদ জানান, হাইকোর্টের রায়ের আদেশ চট্টগ্রামের আদালতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়ার পর আদেশ কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছেছে। এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে আজই মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বাবরকে।
আনন্দ-উচ্ছ্বাসে নেতাকর্মীরা:
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তির খবরে তার নির্বাচনি এলাকা নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) সহ নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে তোরণ, ঢাকায় দল বেঁধে আসছেন নেতাকর্মীরা।
পটভূমি:
২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তার হন লুৎফুজ্জামান বাবর। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় শাস্তি হয়, যার মধ্যে দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড এবং একটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একে একে মামলাগুলোর আপিল শুনানি শেষে তিনি খালাস পান।
আজকের মুক্তি কেবল লুৎফুজ্জামান বাবরের জীবনে নয়, তার পরিবার ও সমর্থকদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে।