জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এবি ব্যাংকের মুনাফা কমেছে

জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এবি ব্যাংকের মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এ সময় ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে মাত্র ৩ পয়সা, যা গত বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ১৩ পয়সা। এ আয় কমার পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে ব্যাংকটির নিট সুদ আয়ের হ্রাসকে দায়ী করা হয়েছে। এ প্রান্তিকে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকেরও আয় কমেছে এবং কয়েকটি ব্যাংক লোকসানের মুখে পড়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবি ব্যাংক পিএলসি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হয়, যা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিক অর্থাৎ জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে এবি ব্যাংকের সামগ্রিক আয়ও কমেছে। এ সময়ে শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় দাঁড়িয়েছে ১৯ পয়সায়, যেখানে গত বছরের একই সময়ে এটি ছিল ৫৪ পয়সা।

এ সময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত সম্পদ মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ৯৩ পয়সায়, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৮ টাকা ৮৭ পয়সা।

তবে এবি ব্যাংকের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থা বেশ চাপের মুখে রয়েছে। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে। আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মোট আমানত ছিল ৩৫ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা, যা চলতি বছরের জুন মাসে কমে ৩৩ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে ঋণ প্রদানেও হ্রাস ঘটেছে। ডিসেম্বরে ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ৩১ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা, যা জুনে কমে ৩১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা থেকে ৯ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকায়। তবে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।

২০২৩ সালের শেষ নাগাদ এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি ছিল ১০ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকটি মাত্র ২ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা সঞ্চিতি রেখেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ বিশাল পরিমাণের সঞ্চিতি ঘাটতি পূরণের চাপ চলতি বছরের মধ্যেই মেটাতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ এত বেশি যে, প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখলে এবি ব্যাংককে লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে। নিরাপত্তা সঞ্চিতির বাধ্যবাধকতা এবং সুদ আয়ের নিম্নগতি ব্যাংকটির মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *