নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে পথ চলতে চায় বিএনপি। দলটি, আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে এবং যেকোনো দূরত্ব এড়াতে সচেষ্ট থাকবে। তবে, নির্ধারিত সময়ে ভোটের ব্যবস্থা না করা হলে, বিএনপি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে আন্দোলনও চালিয়ে যাবে। এই লক্ষ্যে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথে সক্রিয় থাকবে দলটি।
সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। নেতারা বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রে নতুন কোনো সংকট যেন না আসে, সে বিষয়ে দল সচেতন থাকবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চাই, যাতে তারা প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ করে দ্রুত নির্বাচন করতে পারে। পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।”
বিএনপি নেতাদের মতে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দল সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তবে আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বিরোধীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালিয়েছে এবং বহু নেতাকর্মীকে নিখোঁজ, হত্যা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়া জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন জরুরি, এবং জনগণ এখন তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে পেতে উদগ্রীব।
আরো পড়ুন
জাতীয় পার্টি অফিসে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জাসদের প্রতিবাদ
এক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, “দেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে, কিন্তু সম্প্রতি এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে যা বাংলাদেশের সম্মান ক্ষুণ্ন করছে। এটির মাধ্যমে স্বৈরাচার ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।”
বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সরকারের পাশে থাকবে দলটি। একই সঙ্গে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশের দাবিতে রাজপথেও সক্রিয় থাকবে। জনগণও নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে পারে বলে মনে করেন নেতারা। দলটি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঐক্যকে ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালনে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকায় ৮ নভেম্বর বড় র্যালির আয়োজন করা হবে এবং পরবর্তী কর্মসূচিতে আরও সমাবেশের পরিকল্পনা রয়েছে।