সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মুখপাত্র হুমায়ুন কবির ৪৩ লাখ ফ্যামিলি কার্ড বাতিল হওয়ার খবরটি নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, কার্ড বাতিলের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং এটি সঠিক নয়।
আজ শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির ফ্যামিলি কার্ডের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ৪৩ লাখ কার্ড বাতিল হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। এরই মধ্যে প্রথম আলোকে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “মোট এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ড ইতিমধ্যেই স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত হয়েছে। বাকি ৪৩ লাখ কার্ডের স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এখন কার্ডগুলোর তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যদি কোথাও কোনো অনিয়ম ধরা পড়ে, তবে সেই কার্ড বাতিল করা হবে। তবে, বর্তমানে এক কোটি কার্ডধারীই পণ্য পাচ্ছেন।”
এ সময় হুমায়ুন কবির আরও জানান, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, বিশেষত এক ব্যক্তি একাধিক স্থানে একই কার্ড দিয়ে পণ্য সংগ্রহ করার বিষয়ে। এই সমস্যাগুলি দূর করতে স্মার্ট কার্ড তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা নিশ্চিত করবে যে, এক পরিবার থেকে একজনের বেশি কেউ কার্ড পাবেন না।
স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের জন্য তথ্য হালনাগাদ করার বিষয়ে টিসিবি বিভিন্ন জেলা প্রশাসন এবং সিটি করপোরেশনকে চারটি চিঠি পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, “কার্ডধারীদের তথ্য হালনাগাদ করতে এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে টিসিবির কাছে এসব তথ্য এখনও পৌঁছায়নি, তাই বাকি ৪৩ লাখ কার্ডের স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে, এখন পুরোনো কার্ড দিয়েই পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে।”
টিসিবির ট্রাকে পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে এমন সংবাদ ওঠার পর, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবির বলেন, “প্রতিটি পণ্যের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক পরিবারের বরাদ্দ রাখা হয়। সাধারণত ৩৫০ জনের জন্য পণ্য বরাদ্দ থাকে। এর বেশি মানুষ উপস্থিত হলে, টোকেন না পাওয়া ব্যক্তিদের পরবর্তী দিন আসতে বলা হয়।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পবিত্র রমজান মাসে ফ্যামিলি কার্ডধারীদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্য বরাদ্দ থাকবে। এর মধ্যে থাকবে দুই কেজি মসুর ডাল, দুই লিটার ভোজ্যতেল, এক কেজি চিনি, এক কেজি ছোলা এবং মহানগর এলাকায় এক কেজি খেজুর। তবে, রমজান মাসে ট্রাকে পণ্য বিক্রির বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এছাড়া, যারা পরিবেশকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবির মুখপাত্র।